বিশ্বের সবচেযে মূল্যবান মসলা জাফরান
এর বৈজ্ঞানিক নাম Autumn crocus।
বেগুণী রঙের এ ফুলের গর্ভদন্ড (Stigmata) থেকে উৎপাদন করা হয় জাফরান। এর ভিতরে থাকে
লম্বা পরাগ দন্ড। ১ পাউন্ড (৪৫০ গ্রাম) শুকনো জাফরানের জন্য ৫০ থেকে ৭৫ হাজার ফুলের
দরকার হয়। জাফরান প্রতি কেজির মূল্য প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা। আমাদের পাশ্ববর্তী
দেশ ভারতের কাশ্মিরে জাফরান চাষ হয়।
ব্যবহার
বিরিয়ানীতে
রংএর জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও দামি প্রসাধন সামগ্রী হিসেবে জাফরান
ব্যবহার্য। প্রাচীনকালে জাফরান গায়ে মাখা হতো শরীরের সৌষ্ঠব বাড়ানোর জন্য। ত্বক এর
গুণে লাবণ্যময় হয়ে ওঠে। এ ছাড়া নানা রোগেও জাফরানের বহুমাত্রিক ব্যবহার লক্ষ করা
যায়।
চাষ
পদ্ধতি: গাছের মোথা বা বালব (অনেকটা পেঁয়াজের মত) সংগ্রহ করে তা বংশ
বিস্তারের কাজে ব্যবহার করা হয়। ৩-৪ বছর বয়স্ক গাছ থেকে মোথা সংগ্রহ করে তা জমিতে রোপন
করতে হবে। বেলে-দোঁআশ মাটি এ ফসল চাষে বেশি উপযোগী। এ গাছ জলাবদ্ধ সহ্য করতে
পারেনা।পর্যাপ্ত রোদ ও আলো-বাতাস প্রাপ্তি সুবিধা আছে এমন স্থানে এ ফসল আবাদ ব্যবস্থা
নিতে হবে।প্রতিটা জাফরানের বালব বা মোথা ১০-১২ সে.মিটার দূরত্বে ছোট গর্ত তৈরী করে
তা ১২-১৫ সে.মিটার গভীরতায় রোপন করতে হবে।জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে ও ইদুর ও
খরগোশ এর আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে। গাছে শীতের প্রারম্ভে অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে
ফুল আসে। রোপনের প্রথম বছর সাধারণত ফুল আসে না। তবে জাফরানের রোপিত বালব আকারে বেশ
বড় হলে সে বছরই জাফরান গাছ থেকে মাত্র একটা ফুল ফুটতে পারে। পরের বছর থেকে ফুলের
সংখ্যা বাড়বে। তিন বছরের গাছে ৭-৮টা ফুল দিবে।ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের গর্ভদন্ডের
প্রয়োজনীয় অংশ ছেঁটে নিয়ে তা চওড়া একটা পাত্রে পরিষ্কার কাগজ বিছিয়ে নিয়ে তার উপর সংগৃহীত
জাফরান রোদে শুকানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।
অতি মূল্যবান
এই গাছটি পরিবারিক প্রয়োজন মেটাতে সাধারণত বাগানের বর্ডার এলাকাতে বা ছাদে পটে/ ছোট
‘বেড’ তৈরী করে নিয়েও সেখানে সীমিত আকারে জাফরান চাষ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ সম্ভব।
বাণিজ্যিকভাবে চাষের ক্ষেত্রে বীজতলার আকার লম্বায় ৮-১০ মিটার করতে হবে ও সেডের
ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রায় এক যুগ আগে দেশের ৯টি বিএডিসি উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে
পরীক্ষামূলকভাবে জাফরানের চাষ শুরু হয়।
(তথ্য:সংগৃহীত)
উত্তর সমূহ