বিভিন্ন খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং মূল্যবান প্রসাধনী তৈরিতে জাফরান ব্যবহার করা হয়। তাই প্রতি বছর দেশে উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে জাফরান আমদানি করা হয়। সে জন্য দেশের বাজারে জাফরানের দামও বেশি।
জাফরান হচ্ছে প্রায় বেগুনি রঙের ছয় পাপড়ি বিশিষ্ট ফুলের পুংকেশর। বৈজ্ঞানিক নাম Crocus sativus। এদের স্থানীয় নামের মধ্যে আছে স্যাফ্রন, জ্যাঁফারান, কেসার, জাফরান। পৃথিবীর সব দেশে জাফরান হয় না। স্পেন, ইতালি, গ্রিস, ইরান, কাশ্মির জাফরানের জন্য বিখ্যাত। তবে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে জাফরান চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
জাফরান মধ্য হেমন্তের মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ঘরে তুলতে হয়। সকালে সূর্য ওঠার সময় ফুল ফোটে আর দিনের শেষে তা মলিন হয়ে যায়। একটি ফুল থেকে তিনটি পুংকেশর পাওয়া যায়। হাতে করে গাছ থেকে ফুল তুলতে হয়। তা থেকে কেশর আলাদা করতে হয়।
এক গ্রাম জাফরানের জন্য ১৫০টি ফুল দরকার। অন্য হিসাবে ১ কেজি ফুল থেকে ৭২ গ্রাম তাজা কেশর শুকিয়ে ১২ গ্রাম জাফরান পাওয়া যায়। ৪৫০ গ্রাম শুকনো জাফরানের জন্য ৫০-৭৫ হাজার ফুল দরকার। এক কেজির জন্য ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার ফুল দরকার। ৪০ ঘণ্টা সময় লাগে ১ লাখ ৫০ হাজার ফুল তুলতে।
পুংকেশরগুলো বের করে তা এয়ারটাইট পাত্রে রাখা হয়। পাইকারি হিসাবে প্রতি পাউন্ড (৪৫০ গ্রাম) ৫০০ থেকে ৫ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। এক পাউন্ডে ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ কেশর থাকতে পারে। পুরো কাজটি কায়িক পরিশ্রমে শেষ করতে হয়। অটোমেশনের কোন সুযোগ নেই। যে কারণে জাফরানের দাম বেশি।
তবে স্পেনের লা মাঞ্চা অঞ্চলের জাফরানের সুবাস সবচেয়ে ভালো। এ জাফরান দুটি ক্যাটাগরিতে পাওয়া যায়- মাঞ্চা আর ক্যুপে। মাঞ্চা প্রিমিয়াম গ্রেডে উজ্জ্বল লাল রঙের সুন্দর সুবাস রয়েছে। আর ক্যুপের স্প্যানিশ সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে সেরা হিসাবে। ইরানি জাফরানের সুখ্যাতি তার রঙের জন্য। এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা। তাই চায়ের মতো এটারও ব্লেন্ডিং হয়।
সংগৃহীতঃ ২৪ডটকম/মোমিন
উত্তর সমূহ